আজ আমরা আইক্যাপিটাল স্টক নিয়ে আলোচনা করব, বিশেষ করে এর মানে কি এবং এটা কিভাবে কাজ করে। যারা স্টক মার্কেট এবং বিনিয়োগ নিয়ে আগ্রহী, তাদের জন্য এই বিষয়টি জানা খুবই জরুরি। আইক্যাপিটাল স্টক আসলে কি, সেটা জানার আগে আমাদের স্টক মার্কেট সম্পর্কে একটি সাধারণ ধারণা থাকা দরকার। স্টক মার্কেট হলো এমন একটি জায়গা, যেখানে বিভিন্ন কোম্পানির শেয়ার কেনাবেচা হয়। এই শেয়ার কেনার মাধ্যমে আপনি সেই কোম্পানির মালিকানার অংশীদার হতে পারেন।

    আইক্যাপিটাল (iCapital) একটি বিশেষ প্ল্যাটফর্ম যা সম্পদ ব্যবস্থাপকদের (Wealth Managers) এবং উচ্চ-সম্পদ সম্পন্ন বিনিয়োগকারীদের (High-Net-Worth Investors) বিকল্প বিনিয়োগের সুযোগ দিয়ে থাকে। এই বিকল্প বিনিয়োগের মধ্যে প্রাইভেট equity, hedge fund এবং real estate-এর মতো বিভিন্ন অ্যাসেট ক্লাস অন্তর্ভুক্ত। আইক্যাপিটাল স্টক বলতে সাধারণত এই প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর শেয়ারকে বোঝানো হয়। যেহেতু এটি একটি বিশেষ প্ল্যাটফর্ম, তাই এর স্টক মার্কেট অন্যান্য সাধারণ স্টক মার্কেট থেকে কিছুটা ভিন্ন হতে পারে। এখানে বিনিয়োগের নিয়মকানুন এবং সুযোগগুলো বিশেষভাবে তৈরি করা হয়, যাতে বড় বিনিয়োগকারীরা তাদের পোর্টফোলিওকে আরওdiversify করতে পারে।

    আইক্যাপিটাল স্টক-এর ধারণাটি বুঝতে হলে, আমাদের প্রথমে জানতে হবে যে এই প্ল্যাটফর্মটি কিভাবে কাজ করে। আইক্যাপিটাল মূলত একটি B2B (Business-to-Business) মডেল অনুসরণ করে, যেখানে তারা সম্পদ ব্যবস্থাপকদের বিভিন্ন বিকল্প বিনিয়োগ পণ্য সরবরাহ করে। এই সম্পদ ব্যবস্থাপকরা তাদের ক্লায়েন্টদের জন্য উপযুক্ত বিনিয়োগ খুঁজে বের করতে আইক্যাপিটালের প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করেন। এর ফলে, বিনিয়োগকারীরা বিভিন্ন ধরনের অ্যাসেট ক্লাসে বিনিয়োগের সুযোগ পান, যা সাধারণত তাদের জন্য সহজলভ্য নয়।

    উদাহরণস্বরূপ, একজন বিনিয়োগকারী হয়তো প্রাইভেট ইকুইটিতে বিনিয়োগ করতে আগ্রহী, কিন্তু তার কাছে সরাসরি সেই সুযোগ নেই। আইক্যাপিটাল এক্ষেত্রে একটি মাধ্যম হিসেবে কাজ করে, যা ঐ বিনিয়োগকারীকে প্রাইভেট ইকুইটি ফান্ডে বিনিয়োগের সুযোগ করে দেয়। এই প্ল্যাটফর্মটি বিনিয়োগকারীদের জন্যDue Diligence এবং বিনিয়োগ প্রক্রিয়াকে সহজ করে তোলে, যাতে তারা আরও সহজে এবং আত্মবিশ্বাসের সাথে বিনিয়োগ করতে পারে।

    সুতরাং, আইক্যাপিটাল স্টক মানে হলো সেইসব কোম্পানির শেয়ার, যা আইক্যাপিটালের প্ল্যাটফর্মে তালিকাভুক্ত এবং কেনাবেচার জন্য উপলব্ধ। এই স্টকগুলো সাধারণত বড় বিনিয়োগকারীদের জন্য ডিজাইন করা হয় এবং এগুলোর মাধ্যমে তারা তাদের বিনিয়োগ পোর্টফোলিওকে আরও সমৃদ্ধ করতে পারে।

    আইক্যাপিটাল কিভাবে কাজ করে?

    আইক্যাপিটাল কিভাবে কাজ করে, তা ভালোভাবে বুঝতে হলে এর ভেতরের প্রক্রিয়াগুলো জানতে হবে। আইক্যাপিটাল মূলত তিনটি প্রধান স্তম্ভের উপর ভিত্তি করে কাজ করে: প্রযুক্তি, ডেটা এবং নেটওয়ার্ক। এই তিনটি উপাদান একসাথে কাজ করে বিনিয়োগ প্রক্রিয়াকে আরও সহজ, স্বচ্ছ এবং কার্যকর করে তোলে।

    প্রথমত, প্রযুক্তির কথা বলা যাক। আইক্যাপিটাল একটি অত্যাধুনিক প্রযুক্তি প্ল্যাটফর্ম তৈরি করেছে, যা সম্পদ ব্যবস্থাপকদের এবং বিনিয়োগকারীদের জন্য বিকল্প বিনিয়োগের সুযোগগুলো খুঁজে বের করতে সাহায্য করে। এই প্ল্যাটফর্মটি ব্যবহারকারীদের জন্য বিভিন্ন ধরনের ডেটা এবং বিশ্লেষণ সরবরাহ করে, যা তাদের বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত নিতে সহায়ক। উদাহরণস্বরূপ, প্ল্যাটফর্মটি বিভিন্ন প্রাইভেট ইকুইটি ফান্ডের পারফরম্যান্স, ঝুঁকি এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সরবরাহ করে, যা বিনিয়োগকারীদের জন্য তুলনামূলক বিশ্লেষণ করতে সুবিধা দেয়।

    দ্বিতীয়ত, ডেটা হলো আইক্যাপিটালের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। এই প্ল্যাটফর্মটি বিভিন্ন উৎস থেকে ডেটা সংগ্রহ করে এবং সেগুলোকে বিশ্লেষণ করে বিনিয়োগকারীদের জন্য উপযোগী তথ্য সরবরাহ করে। এই ডেটাগুলো বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগের সুযোগগুলো মূল্যায়ন করতে এবং ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে। আইক্যাপিটালের ডেটা অ্যানালিটিক্স টিম নিয়মিতভাবে মার্কেট ট্রেন্ড এবং বিনিয়োগের সুযোগগুলো পর্যবেক্ষণ করে, যাতে তারা তাদের ব্যবহারকারীদের জন্য সঠিক পরামর্শ দিতে পারে।

    সবশেষে, নেটওয়ার্ক হলো আইক্যাপিটালের তৃতীয় স্তম্ভ। এই প্ল্যাটফর্মটি সম্পদ ব্যবস্থাপক, বিনিয়োগকারী এবং বিকল্প বিনিয়োগ প্রদানকারীদের মধ্যে একটি শক্তিশালী নেটওয়ার্ক তৈরি করেছে। এই নেটওয়ার্কের মাধ্যমে, বিনিয়োগকারীরা বিভিন্ন ধরনের বিনিয়োগের সুযোগ সম্পর্কে জানতে পারে এবং তাদের প্রয়োজন অনুযায়ী সঠিক বিনিয়োগটি খুঁজে নিতে পারে। আইক্যাপিটাল নিয়মিতভাবে বিভিন্ন সেমিনার এবং ওয়েবিনারের আয়োজন করে, যেখানে বিনিয়োগকারীরা বিশেষজ্ঞ এবং অন্যান্য বিনিয়োগকারীদের সাথে মতবিনিময় করতে পারে।

    এছাড়াও, আইক্যাপিটাল বিনিয়োগ প্রক্রিয়াকে আরও সহজ করার জন্য কিছু বিশেষ বৈশিষ্ট্য প্রদান করে। উদাহরণস্বরূপ, তারা একটিDue Diligence প্রক্রিয়া সরবরাহ করে, যা বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগের ঝুঁকি মূল্যায়ন করতে সাহায্য করে। তারা একটি স্বয়ংক্রিয় বিনিয়োগ প্ল্যাটফর্মও সরবরাহ করে, যা বিনিয়োগকারীদের জন্য বিনিয়োগ প্রক্রিয়াকে আরও দ্রুত এবং সহজ করে তোলে।

    সুতরাং, আইক্যাপিটাল একটি সমন্বিত প্ল্যাটফর্ম, যা প্রযুক্তি, ডেটা এবং নেটওয়ার্কের মাধ্যমে বিনিয়োগকারীদের জন্য বিকল্প বিনিয়োগের সুযোগ তৈরি করে। এই প্ল্যাটফর্মটি বিনিয়োগ প্রক্রিয়াকে আরও সহজ, স্বচ্ছ এবং কার্যকর করে তোলে, যাতে বিনিয়োগকারীরা আত্মবিশ্বাসের সাথে বিনিয়োগ করতে পারে।

    আইক্যাপিটাল স্টকে বিনিয়োগের সুবিধা

    আইক্যাপিটাল স্টকে বিনিয়োগের বেশ কিছু সুবিধা রয়েছে, যা বিনিয়োগকারীদের জন্য খুবই আকর্ষণীয় হতে পারে। এই সুবিধাগুলো প্রধানত তাদের পোর্টফোলিওdiversify করার সুযোগ, উচ্চ রিটার্নের সম্ভাবনা এবং বিশেষায়িত বিনিয়োগে অ্যাক্সেস পাওয়ার মধ্যে সীমাবদ্ধ। নিচে এই সুবিধাগুলো বিস্তারিত আলোচনা করা হলো:

    প্রথমত,diversification হলো আইক্যাপিটাল স্টকে বিনিয়োগের সবচেয়ে বড় সুবিধাগুলোর মধ্যে একটি। আইক্যাপিটাল বিভিন্ন ধরনের বিকল্প বিনিয়োগের সুযোগ প্রদান করে, যেমন প্রাইভেট ইকুইটি, হেজ ফান্ড এবং রিয়েল এস্টেট। এই অ্যাসেট ক্লাসগুলো সাধারণত স্টক এবং বন্ডের মতো traditional বিনিয়োগ থেকে আলাদা হয়ে থাকে এবং মার্কেটের ওঠানামায় কম সংবেদনশীল হতে পারে। এর ফলে, বিনিয়োগকারীরা তাদের পোর্টফোলিওতে বিভিন্নতা আনতে পারে এবং ঝুঁকির পরিমাণ কমাতে পারে।

    দ্বিতীয়ত, আইক্যাপিটাল স্টকে বিনিয়োগের মাধ্যমে উচ্চ রিটার্ন পাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। বিকল্প বিনিয়োগগুলো সাধারণত স্টক মার্কেটের চেয়ে বেশি রিটার্ন প্রদান করে, কারণ এগুলোয় ঝুঁকিও বেশি থাকে। উদাহরণস্বরূপ, প্রাইভেট ইকুইটি ফান্ডগুলো সাধারণত সেইসব কোম্পানিতে বিনিয়োগ করে, যেগুলো দ্রুত বাড়ছে এবং ভবিষ্যতে ভালো মুনাফা করার সম্ভাবনা রয়েছে। যদিও এই বিনিয়োগগুলোতে ঝুঁকি থাকে, তবে সফল হলে তারা বিনিয়োগকারীদের জন্য উল্লেখযোগ্য পরিমাণে লাভ নিয়ে আসতে পারে।

    তৃতীয়ত, আইক্যাপিটাল বিনিয়োগকারীদের বিশেষায়িত বিনিয়োগে অ্যাক্সেস প্রদান করে। অনেক সময়, সাধারণ বিনিয়োগকারীরা প্রাইভেট ইকুইটি বা হেজ ফান্ডের মতো বিশেষায়িত বিনিয়োগে সরাসরি অংশগ্রহণ করতে পারে না। আইক্যাপিটাল এই সুযোগটি তৈরি করে, যাতে সম্পদ ব্যবস্থাপকরা তাদের ক্লায়েন্টদের জন্য এই ধরনের বিনিয়োগে অ্যাক্সেস করতে পারে। এর ফলে, বিনিয়োগকারীরা তাদের বিনিয়োগ পোর্টফোলিওকে আরও সমৃদ্ধ করতে পারে এবং নতুন ধরনের বিনিয়োগের সুযোগ নিতে পারে।

    এছাড়াও, আইক্যাপিটাল বিনিয়োগ প্রক্রিয়াকে আরও সহজ এবং স্বচ্ছ করে তোলে। তারা একটি অত্যাধুনিক প্রযুক্তি প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে, যা বিনিয়োগকারীদের জন্য ডেটা এবং বিশ্লেষণ সরবরাহ করে। এই প্ল্যাটফর্মটি বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করে এবং তাদের পোর্টফোলিওর পারফরম্যান্স ট্র্যাক করতে সহায়তা করে।

    তবে, আইক্যাপিটাল স্টকে বিনিয়োগের কিছু ঝুঁকিও রয়েছে। বিকল্প বিনিয়োগগুলো সাধারণত কম তরল হয়, যার মানে হলো প্রয়োজন হলে এগুলোকে দ্রুত বিক্রি করা কঠিন হতে পারে। এছাড়াও, এই বিনিয়োগগুলো স্টক মার্কেটের চেয়ে বেশি সংবেদনশীল হতে পারে এবং এদের মূল্যায়ন করাও কঠিন হতে পারে। তাই, বিনিয়োগ করার আগে এই ঝুঁকিগুলো বিবেচনা করা উচিত।

    সবশেষে, আইক্যাপিটাল স্টকে বিনিয়োগ একটি সুযোগ যা বিনিয়োগকারীদের জন্য তাদের পোর্টফোলিওdiversify করতে, উচ্চ রিটার্ন পেতে এবং বিশেষায়িত বিনিয়োগে অ্যাক্সেস করতে সাহায্য করে। তবে, বিনিয়োগ করার আগে ঝুঁকিগুলো বিবেচনা করা উচিত এবং একজন অভিজ্ঞ সম্পদ ব্যবস্থাপকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

    আইক্যাপিটাল স্টক বনাম অন্যান্য স্টক

    আইক্যাপিটাল স্টক এবং অন্যান্য সাধারণ স্টকের মধ্যে কিছু গুরুত্বপূর্ণ পার্থক্য রয়েছে। এই পার্থক্যগুলো বিনিয়োগের সুযোগ, ঝুঁকি এবং বিনিয়োগকারীদের জন্য উপযুক্ততার ক্ষেত্রে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। নিচে এই পার্থক্যগুলো বিস্তারিত আলোচনা করা হলো:

    প্রথমত, আইক্যাপিটাল স্টক হলো সেইসব কোম্পানির শেয়ার, যা আইক্যাপিটালের প্ল্যাটফর্মে তালিকাভুক্ত। এই প্ল্যাটফর্মটি মূলত সম্পদ ব্যবস্থাপক এবং উচ্চ-সম্পদ সম্পন্ন বিনিয়োগকারীদের জন্য ডিজাইন করা হয়েছে। এর বিপরীতে, অন্যান্য স্টকগুলো সাধারণত পাবলিক স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্ত থাকে, যেখানে যে কেউ শেয়ার কেনাবেচা করতে পারে। এই কারণে, আইক্যাপিটাল স্টকের অ্যাক্সেস সাধারণত সীমিত থাকে এবং এটি শুধুমাত্র নির্দিষ্ট বিনিয়োগকারীদের জন্য উপলব্ধ।

    দ্বিতীয়ত, আইক্যাপিটাল স্টকগুলো সাধারণত বিকল্প বিনিয়োগের সাথে সম্পর্কিত, যেমন প্রাইভেট ইকুইটি, হেজ ফান্ড এবং রিয়েল এস্টেট। এই বিনিয়োগগুলো স্টক মার্কেটের চেয়ে বেশি জটিল এবং এদের মূল্যায়ন করাও কঠিন। অন্যদিকে, অন্যান্য স্টকগুলো সাধারণত পাবলিকলি ট্রেডেড কোম্পানির শেয়ার, যাদের আর্থিক তথ্য সহজে পাওয়া যায় এবং মূল্যায়ন করা সহজ।

    তৃতীয়ত, আইক্যাপিটাল স্টকে বিনিয়োগের জন্য সাধারণত বেশি পরিমাণ অর্থের প্রয়োজন হয়। এর কারণ হলো এই প্ল্যাটফর্মটি বড় বিনিয়োগকারীদের জন্য তৈরি করা হয়েছে, যারা বেশি পরিমাণে বিনিয়োগ করতে সক্ষম। অন্যদিকে, অন্যান্য স্টকে বিনিয়োগের জন্য কম পরিমাণ অর্থের প্রয়োজন হতে পারে, কারণ এগুলো সহজেই কেনাবেচা করা যায় এবং ছোট বিনিয়োগকারীরাও এখানে অংশগ্রহণ করতে পারে।

    এছাড়াও, আইক্যাপিটাল স্টকের ঝুঁকি এবং রিটার্নের সম্ভাবনা অন্যান্য স্টকের চেয়ে আলাদা। বিকল্প বিনিয়োগগুলো সাধারণত বেশি রিটার্ন প্রদান করে, তবে এদের ঝুঁকিও বেশি থাকে। অন্যদিকে, অন্যান্য স্টকগুলো কম রিটার্ন দিতে পারে, তবে এদের ঝুঁকিও তুলনামূলকভাবে কম থাকে।

    সবশেষে, আইক্যাপিটাল স্টক এবং অন্যান্য স্টক উভয়ই বিনিয়োগের সুযোগ প্রদান করে, তবে এদের মধ্যে কিছু গুরুত্বপূর্ণ পার্থক্য রয়েছে। আইক্যাপিটাল স্টক সেইসব বিনিয়োগকারীদের জন্য উপযুক্ত, যারা বিকল্প বিনিয়োগে আগ্রহী এবং বেশি ঝুঁকি নিতে প্রস্তুত। অন্যদিকে, অন্যান্য স্টক সেইসব বিনিয়োগকারীদের জন্য উপযুক্ত, যারা কম ঝুঁকিতে বিনিয়োগ করতে চান এবং সহজে শেয়ার কেনাবেচা করতে চান। তাই, বিনিয়োগ করার আগে নিজের প্রয়োজন এবং ঝুঁকির ক্ষমতা বিবেচনা করা উচিত।

    কিভাবে আইক্যাপিটাল স্টকে বিনিয়োগ করবেন?

    আইক্যাপিটাল স্টকে বিনিয়োগ করতে হলে, আপনাকে কিছু নির্দিষ্ট পদক্ষেপ অনুসরণ করতে হবে। যেহেতু এটি একটি বিশেষ প্ল্যাটফর্ম, তাই এখানে বিনিয়োগের প্রক্রিয়া অন্যান্য সাধারণ স্টক মার্কেটের চেয়ে কিছুটা ভিন্ন। নিচে একটি ধাপে ধাপে গাইড দেওয়া হলো, যা আপনাকে আইক্যাপিটাল স্টকে বিনিয়োগ করতে সাহায্য করবে:

    1. যোগ্যতা নির্ধারণ করুন: আইক্যাপিটাল মূলত উচ্চ-সম্পদ সম্পন্ন বিনিয়োগকারী এবং সম্পদ ব্যবস্থাপকদের জন্য তৈরি করা হয়েছে। তাই, প্রথমে আপনাকে দেখতে হবে যে আপনি এই প্ল্যাটফর্মে বিনিয়োগের জন্য যোগ্য কিনা। সাধারণত, এর জন্য আপনার একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ সম্পদ থাকতে হয় এবং আপনাকে একজন স্বীকৃত বিনিয়োগকারী (Accredited Investor) হিসেবে গণ্য হতে হয়।

    2. একটি সম্পদ ব্যবস্থাপক খুঁজুন: আইক্যাপিটালে সরাসরি বিনিয়োগ করা সম্ভব নয়। আপনাকে একজন সম্পদ ব্যবস্থাপকের মাধ্যমে বিনিয়োগ করতে হবে, যিনি আইক্যাপিটালের সাথে যুক্ত। একজন ভালো সম্পদ ব্যবস্থাপক আপনার বিনিয়োগের লক্ষ্য এবং ঝুঁকির ক্ষমতা অনুযায়ী সঠিক বিনিয়োগ খুঁজে বের করতে সাহায্য করতে পারে।

    3. Due Diligence করুন: বিনিয়োগ করার আগে, আপনাকে অবশ্যই কোম্পানির সম্পর্কে ভালোভাবে জানতে হবে। আইক্যাপিটাল তাদের প্ল্যাটফর্মে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য সরবরাহ করে, যা আপনাকে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করবে। আপনি কোম্পানির আর্থিক অবস্থা, পরিচালনা পর্ষদ এবং ভবিষ্যতের সম্ভাবনা সম্পর্কে জানতে পারেন।

    4. বিনিয়োগের পরিকল্পনা করুন: আপনার সম্পদ ব্যবস্থাপকের সাথে আলোচনা করে একটি সঠিক বিনিয়োগের পরিকল্পনা তৈরি করুন। এই পরিকল্পনায় আপনার বিনিয়োগের লক্ষ্য, সময়সীমা এবং ঝুঁকির মাত্রা উল্লেখ থাকতে হবে। আইক্যাপিটাল বিভিন্ন ধরনের বিকল্প বিনিয়োগের সুযোগ প্রদান করে, তাই আপনাকে আপনার প্রয়োজন অনুযায়ী সঠিক বিনিয়োগটি বেছে নিতে হবে।

    5. বিনিয়োগ করুন এবং পর্যবেক্ষণ করুন: পরিকল্পনা অনুযায়ী বিনিয়োগ করার পর, আপনাকে নিয়মিতভাবে আপনার বিনিয়োগের পারফরম্যান্স পর্যবেক্ষণ করতে হবে। আইক্যাপিটাল তাদের প্ল্যাটফর্মে বিনিয়োগের অগ্রগতি এবং রিটার্ন সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য সরবরাহ করে, যা আপনাকে আপনার বিনিয়োগের অবস্থা জানতে সাহায্য করবে। প্রয়োজন হলে, আপনি আপনার সম্পদ ব্যবস্থাপকের সাথে আলোচনা করে বিনিয়োগের কৌশল পরিবর্তন করতে পারেন।

    এছাড়াও, আইক্যাপিটালে বিনিয়োগ করার সময় কিছু বিষয় মনে রাখতে হবে। প্রথমত, বিকল্প বিনিয়োগগুলো সাধারণত কম তরল হয়, তাই প্রয়োজন হলে এগুলোকে দ্রুত বিক্রি করা কঠিন হতে পারে। দ্বিতীয়ত, এই বিনিয়োগগুলো স্টক মার্কেটের চেয়ে বেশি সংবেদনশীল হতে পারে এবং এদের মূল্যায়ন করাও কঠিন হতে পারে। তাই, বিনিয়োগ করার আগে এই ঝুঁকিগুলো বিবেচনা করা উচিত।

    সবশেষে, আইক্যাপিটাল স্টকে বিনিয়োগ একটি সুযোগ যা বিনিয়োগকারীদের জন্য তাদের পোর্টফোলিওdiversify করতে এবং উচ্চ রিটার্ন পেতে সাহায্য করে। তবে, বিনিয়োগ করার আগে একজন অভিজ্ঞ সম্পদ ব্যবস্থাপকের পরামর্শ নেওয়া উচিত এবং সমস্ত ঝুঁকি বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত।

    এই আর্টিকেলে, আমরা আইক্যাপিটাল স্টক নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছি এবং এর বিভিন্ন দিকগুলো তুলে ধরেছি। আশা করি, এই তথ্যগুলো আপনাকে আইক্যাপিটাল স্টকে বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করবে।